পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পেয়ারা চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন মো.আবুল বাশার নামের এক কৃষক। পেয়ারা চাষ এবং তা বিষমুক্তভাবে বিক্রি করে যে ভাগ্য বদল করা যায়, এরই দৃষ্টান্ত রেখেছেন উপজেলার নীলগঞ্চ ইউনিয়নের এলেমপুর গ্রামের অতিদরিদ্র এই মানুষটি। বারো মাসই তার বাগানে পেয়ারার ফলন হয়। নিজের কঠোর শ্রম ও ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তীল তীল করে গড়ে তুলেছেন স্বপ্নের পেয়ারা বাগন। বছর না ঘুরতেই বাগান থেকে ফলন পেতে শুরু করেন। খেতে সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল পেয়ারার যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে বাজারে। বাশার এখন এলাকার কৃষকদের মডেল। তার এ পেয়ারা বাগান দেখতে অনেকেই ভিড় করছেন। কেউ কেউ তার দেখাদেখি পেয়ারা চাষও শুরু করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দুই একর ৩৩ শতাংশ জমির উপর বাগানটি গড়ে তোলা হয়েছে। যাতে বারো মাসই পেয়ারা হয়। বর্তমানে তার বাগনে সাড়ে পাঁচশ পেয়ারা গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছেই ঝুলছে পেয়ারা।
দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। নিজেই পরির্চায় ব্যস্ত কৃষক বাশার। পাখি কিংবা পোকা যাতে ফসল নষ্ট না করে, এ জন্য প্রতিটি পেয়ারা পলিথিন দিয়ে অটকানো হচ্ছে।
কাজের ফাকে কথা হয় পেয়ারা চাষী আবুল বাশারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ৩০ বছর ধরে তার পরিবার সবজি চাষ করে আসছে। তবে তা অধিক কষ্টকর ও কম লাভজনক হওয়ায় পেয়ারা চাষের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ২০১৫ সালের শুরুতে এ বাগান গড়ে তোলেন। একই বছরের শেষদিকে গিয়েই ফলের দেখা পান। বাগান তৈরিতে মোট ব্যয় হয় পাঁচ লাখ টাকা। ইতোমেধ্যে ১২ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করেছেন। প্রতি কেজি পেয়ারা ৫০ থেকে ৬০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হয়। শীত মৌসুমে ফলন কম হলেও পেয়ারার দাম তুলনামূলক বেশি পাওয়া যায়। জ্যৈষ্ঠ মাসে পেয়ারা গাছে এক দফা ফুল ও ফল আসে। এই মৌসুম কমপক্ষে ৯ মাস স্থায়ী হয়। তিনি আরও জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ৫-৬ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী। তবে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ফসল বাজারজাত করা কষ্টসাধ্য বলে অভিযোগ করেন তিনি। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির মাহমুদ জানান, সড়ক উন্নয়নের কাজ বাস্তবায়নাধীন। শীঘ্রই এর সমাধান মিলবে। এছাড়া কৃষক বাশারের উদ্যোগককে তিনি সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, বাজারে বিষমুক্ত পেয়ারার যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। তিনি এমন পেয়ারা বাগান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। অন্য কৃষকদেরও এ ধরনের উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসা উচিৎ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এম এ মান্নান বলেন, পেয়ারা চাষী বাশার আমাদের কছে পরামর্শ নিতে আসেন। আমরাও সরেজমিন প্রদর্শন করে তাকে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেছি।
উত্তম কুমার হাওলাদার,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি
পটুয়াখালী,রোববার,২৬ মে,এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।