গ্রুপ স্টাডির কথা বলে ডেকে নিয়ে কলাবাগানে ধর্ষণের পর রক্তক্ষরণে স্কুলছাত্রীর আনুশকা নূর আমিন মৃত্যুর অভিযোগে একটি মামলা করা হয়েছে। এই ঘটনায় শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) ফারদিন ইফতেখার দিহান নামে এক তরুণকে আসামি করে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মামলাটি করেছেন ওই ছাত্রীর বাবা। শুক্রবার সকালে গণমাধ্যমকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলাবাগান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আ ফ ম আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, ওই শিক্ষার্থীর বন্ধু দিহানকে একমাত্র আসামি করে তার বাবা বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। আমাদেরও ধারণা, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকেও তেমন রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। কারণ ধর্ষণের পর তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।
ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী রাজধানীর ধানমন্ডির মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে গ্রুপ স্টাডির কথা বলে তাকে অভিযুক্তের কলাবাগানের ডলফিন গলির বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। ধর্ষণের পর রক্তক্ষরণ হলে নির্যাতিতাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যান অভিযুক্ত নিজেই। এর মধ্যেই স্বজনদের কাছে খবর আসে, মারা গেছেন ওই শিক্ষার্থী।
শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) নিজের সোবহানবাগের বাসা থেকে কলাবাগানে বন্ধু দিহানের বাসায় যায় আনুশকা। সেখানে যাওয়ার পর আমরা জেনেছি, আনুশকা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার বন্ধুর ভাষ্যমতে, এরপর তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভর্তি করার আগেই তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে গিয়ে মরদেহ উদ্ধারসহ দিহান নামে ওই ছেলেটিকে আটক করি। এরপর তাকে হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।এক পর্যায়ে সে স্বীকার করে, তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক ও সম্মতির ভিত্তিতে শারীরিক মেলামেশা হয়। এরপর ওভার ব্লিডিং হয়, এ কারণে আনুশকা সেন্সলেস হয়ে যায়। তখন তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে তার মৃত্যু হয়। তবে দৈহিক মেলামেশার বিষয়টি পরীক্ষা-নীরিক্ষা সাপেক্ষে প্রমাণের বিষয়। এর বাইরে অন্য কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়েছিল কিনা সেটি পরীক্ষার জন্য আলামত সংগ্রহের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ডিসি বলেন, এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা আল আমিন বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। সেখানে দিহান নামে ওই একজনই আসামি, তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।তবে এ ঘটনাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। তাদের বিনীত অনুরোধ করতে চাই, ভিকটিমের পরিবার বুঝে-শুনে মামলা করেছে। এরপরও এর সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
এ ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত কিংবা অন্য কোনো ইন্ধন থাকলে সেটা আমরা অত্যন্ত সতর্কভাবে তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের কঠোরভাবে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করবো। তাই সবাইকে এটিকে অন্যখাতে প্রবাহিত না করার বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
ঢাকা,শুক্রবার,০৮ জানুয়ারি,এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।