বাংলাদেশের বাংলা চলচ্চিত্র বিশ্ববাজারে প্রতিষ্ঠিত করাই আমাদের লক্ষ্য। চলচ্চিত্রের যে স্বর্ণযুগ ছিল তা পেরিয়ে বাংলা ছবি বিশ্ববাজার দখল করবে সে লক্ষ্যেই কাজ করতে চাই বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার (২০ নভেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় সভার শুরুতে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাংলা চলচ্চিত্র বিশ্ববাজারে প্রতিষ্ঠিত করাই আমাদের লক্ষ্য। চলচ্চিত্রের যে স্বর্ণযুগ ছিল তা পেরিয়ে বাংলা ছবি বিশ্ববাজার দখল করবে সে লক্ষ্যেই কাজ করতে চাই।তথ্যমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্রের বন্ধ্যাত্ব কেটে গেছে। চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগে পৌঁছাতে আরও অনেক কাজ করতে হবে। আশার কথা এই যে গতবছরের তুলনায় এবছর চলচ্চিত্রশিল্পে গতিশীলতা এসেছে। অনেক নতুন নতুন প্রযোজক ও পরিচালক এসেছেন। পরিচালক যারা উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছিলেন তারা আবার নতুন করে ছবি নির্মাণ করার কথা চিন্তা করছেন। অনেকে কাজ শুরু করেছেন।
এছাড়া চলচ্চিত্রশিল্পের উন্নয়ন ও বন্ধ হল চালুর লক্ষ্যে সরকার স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দিতে উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এটা পাওয়া গেলে আশা করা যায় দেশে বন্ধ হলগুলো পুনরায় চালু হবে। আর চলচ্চিত্রশিল্পের দৈন্য কেটে যাবে।
তিনি বলেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে চলচ্চিত্রকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। তার মধ্যে এফডিসির দৈন্য কাটিয়ে তোলার জন্য ৩২২ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। যা দিয়ে আগামী ৩/৪ বছরের মধ্যে সেখানে নতুন ভবন তৈরি করা হবে। যেখানে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা থাকবে। পাশাপাশি গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ১০৫ একর জমির ওপর বঙ্গবন্ধু ফিল্মসিটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই ফিল্মসিটিকে বিশ্বমানের করতে ১ হাজার কোটি টাকার একটি বড় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। তবে বিটিভির জন্য ১৮শ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে- এটা সঠিক তথ্য নয়।
হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের হাত ধরে এফডিসি প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর অনেক কালজয়ী শিল্পী চলচ্চিত্রে এসেছেন। ভারতের মুম্বাই শহরে অনেক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের দেশে চলচ্চিত্রশিল্পে সামাজিক চলচ্চিত্র না হয়ে অন্য চলচ্চিত্র নির্মিত হচ্ছিল। পরিবার নিয়ে দেখার মতো ছবি এখন হচ্ছে। অনেক ছবি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পুরস্কারও পেয়েছে। দেশে নতুন সিনেপ্লেক্স হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে নতুন নতুন সিনেপ্লেক্স হচ্ছে। ঢাকায় দু’টি আছে, আরও কয়েকটি হবে এক-দুই বছরের মধ্যে। চট্টগ্রামে চারটি সিনেপ্লেক্স হতে যাচ্ছে। মানুষের রুচির পরিবর্তন হচ্ছে। সুতরাং, সিনেমা হলে আধুনিকায়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদী লোন দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। সহসা এক্ষেত্রে সমাধানে পৌঁছাতে পারবো। সরকারিভাবে জেলাগুলোতে তথ্যকেন্দ্র নির্মাণ করবো। এগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে সিনেমার স্বর্ণযুগ ফিরে আসবে।চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, বাংলা সিনেমার উন্নয়নে আমরা সবাই একযোগে কাজ করতে চাই। আগের তুলনায় এফডিসির উন্নয়নে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানাই। কারণ ভালোমানের ছবি নির্মাণের জন্য আমাদের আরও উদ্যোগ নিতে হবে। এসময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান, সহ-সভাপতি ডিপজল ও রুবেল, সহ-সাধারণ সম্পাদক আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সুব্রত, আন্তর্জাতিক-বিষয়ক সম্পাদক ইমন, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক জ্যাকি আলমগীর, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক জাকির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ ফরহাদ, কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য অঞ্জনা সুলতানা, অরুণা বিশ্বাস, আলীরাজ, আসিফ ইকবাল, আলেকজান্ডার বো, জেসমিন, জয় চৌধুরী, মারুফ আকিব ও রোজিনা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা,বুধবার,২০ নভেম্বর,এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।