নারীরা এখন চার দেয়ালে বন্দী নয়। ঘর সংসারের গন্ডি পেড়িয়ে তারা আজ কর্ম সংস্থানের মাধ্যমে নিজের অধিকার অর্জন ও নিজের পায়ে দাড়াতে শিখেছে। ভাল ভাবে বেঁচে থাকার জন্য যে কোন কাজে তারাও পুরুষের সমান পারদর্শী তা প্রমান করল রোক্সনা ইয়াছমিন রোজী। ভারত, নেপাল, চায়না ও মালেশিয়া ভ্রমন শেষে নিজেই গড়ে
তুলেছেন কুয়াকাটা সি বিচ ফুডস্ধসঢ়; নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তিনি সৈকতে বসে ওইসব দেশের বাহারী খাবার তৈরি ও বিক্রি করে সকলের নজর কেড়েছেন। স্নাতক
পাস এ নারী এখন স্বশিক্ষিত, অল্প শিক্ষিত বা উচ্চ শিক্ষিত নারীদের স্বাবলম্বী হওয়ার এক অন্যন্য দৃষ্টান্ত। আত্মবিশ্বাসী ওই নারীর বাড়ি লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ এলাকায়।
পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সৌন্দর্য ও দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আগমনের কারনে এটি একটি ব্যবসা স্পট ভেবে তিনি নিজ এলাকা থেকে ছুটে আসেন।স্থানীয় ও পর্যটকদের কাছ থেকে জানা গেছে, সৈকতে আনন্দ উল্লাসের সাথে পর্যটকরা রকমারি খাবার খেতে তার দোকানে দলে দলে আসেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও বিদেশী বাহারী খাবারের স্বাদ নিতে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আগত পর্যটকদের ভিড় জমে। তার তৈরী খাবারের তালিকায় রয়েছে শর্মা, মম,স্যান্ডউইচ, রাজকাচুরী, পাস্তা, সচেস, মিল্ক শেক, বার্গার, চিকেন ফ্রাই, শিক কাবাব, বারবিকিউ। এছাড়াও রয়েছে দই-ফুসকা, নুডুল্ধসঢ়;স, স্যুপ, হালিম, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন পুলি, ফালুদা, চাট ও কফি। এসব খাবার গুলো ১৫ টাকা থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করায় সকলের পছন্দে পরিনত হয়েছে। আত্মবিশ্বাসী রোক্সনার ইয়াছমিন রোজীর সাথে তার দোকানে বসে কথা হলে তিনি বলেন, চার ভাই বোনের মধ্যে সে সবার বড়। স্বামী মনোয়ার হোসেন বাপ্পি প্রবাসে থাকেন। একটি বে-রকাসরকারী প্রতিষ্ঠনের চাকুরীর সুবাদে সে বেশ কয়েকটি দেশে ভ্রমন করেছে। ওইসব দেশের খাবার খেয়ে ও দেখে শিখেছেন তৈরী করার পদ্ধতি। স্বামীর আয়ের উপর নির্ভর না করে একটু ভালভাবে বেঁচে থাকার জন্য নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েছেন। প্রায় ২ লাখ টাকা ব্যয়ে সৈকতে গড়ে তুলেছেন কুয়াকাটা সি বিচ ফুডস্ধসঢ়; নামের এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সকল খরচ বাদে ভালই চলছে তাঁর ব্যবসা। তিনি বলেন, সৈকতের আশপাশে ভাল কোন জায়গা পেলে ব্যবসাটি একটু বড় করার ইচ্ছে রয়েছে তার। ঢাকায় প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোনালিসা পরিবারসহ কুয়াকাটায় এই
প্রথম বেড়াতে আসেন। তার সাথে রোজীর সি বিচ ফুডস্ধেসঢ়; বসে কথা হলে তিনি বলেন, খাবার গুলো ভালো। এখানে এধরনের খাবার পাওয়া যায় তা জানা ছিলনা।
অপর এক পর্যটক ব্যবসায়ী বোরহান উদ্দিন বলেন সৈকতে ছোট ছোট অনেক খাবারের দোকান রয়েছে। এ দোকানটি বেশ আলাদা। কয়েকটি দেশের খাবার তৈরি করে বিক্রি করার বিষয়টি পর্যটকদের জন্য বাড়তি আকর্ষন।কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রী কলেজের বাংল বিষয়ের প্রভাষক মো.শাহ্ধসঢ়;বুদ্দিন হাওলাদার জানান, এভাবে শিক্ষিত নারীর সৈকতে মানসম্মত দেশী-বিদেশী খাবার তৈরী ও বিক্রি করা এই প্রথম। এটি দেখে স্থানীয় নারীরাও ব্যবসায় উদ্যোগী হবে। ট্যুরিষ্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোন’র সহকারী পুলিশ সুপার মীর ফসিউর রহমান জানান, সৈকতে যে সকল নারীরা ব্যবসা করে তাদের সার্বিক নিরাপত্তা ও যে কোন প্রকার সমস্যা এড়াতে আমাদের পক্ষ থেকে সহযোগীতা করা হয়।
উত্তম কুমার হাওলাদার,পটুয়াখালী প্রতিনিধি
পটুয়াখালী,মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টম্বর, এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।