একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কিত নির্বাচন উল্লেখ করে অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, নজিরবিহীন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও ভোট ডাকাতির এই নির্বাচনের ফলাফল আমরা পুরোপুরিভাবে প্রত্যাখান করছি এবং আমরা মনে করি এই নির্বাচন পুনরায় নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে করতে হবে। এই সরকার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগসাজস করে যে নির্বাচন করলো এটা জাতির রাজনৈতিক ইতিহাসে কলঙ্কময় হয়ে থাকবে।তিনি বলেন, এই নির্বাচন সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য এই জন্যে যে নির্বাচনের পূর্ব থেকেই বিরোধীদলের নেতাকর্মীরা যাতে অংশ নিতে না পারে সেজন্য গায়েবি ও মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। এসব মামলায় প্রত্যেকটি আসনে ৩শ’ থেকে ৫শ’ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। তারই সূত্র ধরে পুলিশ ভোটের দিন পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে। এসময় প্রায় ২১ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে একরকম নজিরবিহীনভাবে নির্বাচন করা হয়েছে। এ ধরনের নির্বাচন জাতি আগে কখনো দেখেনি। পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে একটা যুদ্ধাবস্থা তৈরি করা হয়েছে। এই নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে খালেদা জিয়া ২০১৪ সালের নির্বাচনে না যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন এজেন্ট না আসলে আমি কি করবো- তার এই বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এজেন্টকে তো আসতে দেয়নি। এই সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ও নির্বাচন কমিশনের যোগসাজসে আমাদের এজেন্টদের যেতে দেয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, এখন যে সমস্যা সেটা হলো নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা। এখন নির্বাচনের পরপরই শুরু হয়েছে সহিংসতা। ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের প্রার্থীদের বাড়ি বাড়ি আক্রমণ করা হচ্ছে। তাদের নেতাকর্মীদের বাড়ি আক্রমণ করা হচ্ছে। বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষক এসেছিল কি না তা আমাদের জানা নেই। কারণ যারা আসতে চেয়েছিল তাদের ভিসা দেওয়া হয়নি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন দুইজনের একটা মনিটরিং টিম পাঠিয়েছে। ভারতীয়রা অফিসিয়ালি কাদের পাঠিয়েছে আমি জানি না। সুতরাং যাদের অবজারভার হিসেবে দেখানো হচ্ছে এটা জাস্ট আইওয়াশ। তারা তাদের স্পন্সরে এসেছিল।নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে ফখরুল বলেন, আমরা জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছি জুলুম নির্যাতন সত্ত্বেও।
শপথ নেবেন কি না জানতে চাইলে বগুড়া-৬ (সদর) আসন থেকে নির্বাচিত মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা তো এ নির্বাচনের ফলাফলই প্রত্যাখ্যান করছি।’
ঢাকা,সোমবার,৩১ ডিসেম্বর,এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।