নার্সিং পেশা অত্যন্ত মহৎ সেবাধর্মী একটি কাজ। তাই এ পেশাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বুধবার (১৫ মার্চ) গাজীপুরের কাশিমপুরে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালের নার্সিং কলেজের দ্বিতীয় স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধনামন্ত্রী এ কথা বলেন।এ সময় তিনি আরো বলেন,সরকার সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর মাধ্যমে বিনামূল্যে ইনসুলিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নার্সিংই সব থেকে বিশ্বস্ত সেবা, তাই ক্ষমতায় এসে এ পেশাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে বর্তমান সরকার। আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এটি নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করছে। নার্সিং পেশাকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। এ পেশায় শিক্ষার্থীদের আসার জন্য আকর্ষণ বাড়াতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০ হাজার নার্স ও ৫ হাজার মিডওয়াইফ নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনামূল্যে ওষুধের পাশাপাশি ইনসুলিনও দেয়া হবে। যুব সম্প্রদায় নার্সিং পেশায় যুক্ত হয়ে দেশের পাশাপাশি বিদেশেও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। শুধু দেশে নয়, কর্মসংস্থানে বিদেশেও ব্যাপকভাবে চাহিদা রয়েছে নার্সিং পেশায় বলেও জানান তিনি।
এখন তো ডক্টরেটও করা যায় নার্সিংয়ে–এ কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের বাইরে থাইল্যান্ড ও ভারতে প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে নার্সদের; যাতে তারা আরও সক্ষম হয়ে উঠতে পারেন এ কাজে।
দেশের সব বিভাগেই একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে, সে ক্ষেত্রে দেশেও প্রচুর নার্স প্রয়োজন হবে। এ জন্য ১০ হাজার নার্স ও ৫ হাজার মিডওয়াইফের পদ সৃষ্টির মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
ওষুধ বা চিকিৎসার পাশাপাশি নার্সদের ভালো ব্যবহার রোগীকে সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করে, এতে তাদের নতুন আত্মবিশ্বাস জোগায় বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, সাভার ও গাজীপুরের মানুষের সেবায় কাশিমপুরে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে; এ বিশেষায়িত হাসপাতালের পাশাপাশি নতুন কলেজটিতেও মানুষ আরও সেবা পাবে।
শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জীবনাদর্শ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিলেন আমার মা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। বাবাকে সব ধরনের কাজে সহযোগিতা করতেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩০ প্রকারের ওষুধ আমরা বিনা পয়সায় মানুষকে দিয়ে থাকি। সেই সঙ্গে সঙ্গে আমরা এটাও সিদ্ধান্ত নিয়েছি কমিউনিটি ক্লিনিকে আমরা যে বিনা পয়সায় ওষুধ দেই সেখানে ইনসুলিনটাও বিনা পয়সায় দিয়ে দেবো। যাতে এই রোগটা থেকে মানুষ মুক্তি পায় সেই ব্যবস্থাটাও আমরা নিয়েছি।
টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় জনগণের সেবা করে এবং আমরা আমাদের সময়োচিত পদক্ষেপ নিই। ২০০৯ থেকে ২০২৩, অন্তত দাবি করতে পারি যে, বাংলাদেশটাকে আমরা বদলে দিতে পেরেছি।
তিনি বলেন, সেবা দেওয়াটাই হচ্ছে আমাদের কাজ আর আমরা সেটাই করে যাচ্ছি।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সফলতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশ হলো ডিজিটাল বাংলাদেশে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, শিক্ষার হার বৃদ্ধি করতে পেরেছি। শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার কমিয়েছি, স্বাস্থ্য সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে, অর্থাৎ ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর, সেই সুযোগ আমরা বৃদ্ধি করেছি। আমরা ২৩টি নতুন মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছি। ফলে বর্তমানে ৪ হাজারের অধিক ছাত্র-ছাত্রী সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ৪৭টি বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। মানসম্পন্ন চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণা উন্নয়নের লক্ষ্যে ৫টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেকগুলো বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে।
ঢাকা,বুধবার ১৫ মার্চ এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।