দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আবু বকর ভিক্ষা করা ছেড়ে দিয়ে এখন ব্যবসা শুরু করছে। দীর্ঘ বিশ বছর ধরে যে মানুষটি ভিক্ষার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরত, আজ সেই মানুষটি লাঠির সাহায্যে নিয়ে গলায় পানের বাক্স ঝুলিয়ে খিলকি পান বিক্রি করছেন। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের বলিপাড় গ্রামের বাসিন্দা হতদরিদ্র আবু বকরের ছোটবেলায় জ¦র থেকে তার দু’চোখে সমস্যা দেখা দেয়। অভাবের সংসারে তার পরিবার চিকিৎসা করাতে পারেননি। সে সময় থেকে চলতেন অপরের সাহায্য ও সহযোগিতা নিয়ে। বেশরি সময়ে সহ্য করতে হয়েছে অপরের বঞ্চনা ও অপমান। কোন উপায় না পেয়ে বেচে থাকার তাগিদে সে
ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসাবে বেচে নেয়। পৌর শহরের ব্যবসায়ী মো.লোকমান হোসাইনের আর্থিক সহযোগীতায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অসহায় লোকটি ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে ভ্রম্যমান পান ব্যবসায়ী হয়েছে।দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আবু বকর জানান, আমি দুই চোখে পুরোপুরি দেখতে পাইনা। কাউকে ভালভাবে চিনতে পারিনা। তখন ভিক্ষা ছাড়া কোন উপায় ছিলোনা। লোকমান ভাই আমাকে শিখিয়েছে ভিক্ষা করা ভালনা। তার
সহোযোগীতায় এখন ব্যবসা করছি। প্রতিদিন প্রায় দুই চলি করে পান বিক্রি করছি। তাতে দেড়শ থেকে দুইশ টাকার মত আয় হয়। বর্তমানে এক ছেলে,দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে কোন রকমের দিন কেটে যায়।কলাপাড়া পৌর শহরের ব্যবসায়ী মো.লোকমান হোসাইন বলেন, ভিক্ষা নিতে আসলে তার সাথে আমার কথা হয়। তখন তাকে ভিক্ষা না করে অন্য কোন কাজ করার কথা বলি। তখন সে বলে, আমি চোখে ভালভাবে দেখতে পাইনা। আমার কোন টাকা পয়সা নাই। কে আমাকে সাহায্য করবে। কি দিয়ে ব্যবসা করব।তারপর তাকে সহায়তার কথা বলি এবং তিনি রাজী হয়। আমি দের হাজার টাকা খরচ করে একটি বাক্স, পান, সিগারেট ও অন্যান্য সামগ্রী কিনে দেই।এরপর থেকে হাতের লাঠিতে ভর করে সে ব্যবসা করছে। আশা করছি তার অভাব মেটাতে কিছুটা হলেও সাহায্য করতে পেরেছি। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আবু বকর সম্পর্কে কলাপাড় মহিলা কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক নেছার উদ্দিন আহমেদ টিপু বলেন, শহরের বিভিন্ন স্থানে লোকটিকে আগে ভিক্ষা করতে দেখেছি। এখন সে প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও অপরের সহযোগিতায় মেহনত করছে এটা মহানবীর (দ:) শিক্ষা। সমাজের
বিত্তবানদের এধরনের কাজে এগিয়ে আসা উচিত। এ রকম সহযোগীতা পেলে অন্যরাও ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দেবে।
উত্তম কুমার হাওলাদার,কলাপাড়া (পটুয়াখালী)প্রতিনিধি,
পটুয়াখালী,বুধবার, ২৩ নভেম্বর, এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।