মনের প্রথম জানালা বলতে যদি বোঝায় নিজস্ব অন্তরের জগৎ, তাহলে দ্বিতীয় জানালা বলতে নিজের মনের মাধুরী দিয়ে বারান্দা বা ছাদে তৈরি করা বাগান কেনই বা বোঝানো হবে না। নিজের ফ্ল্যাট বা বাসার বারান্দায় বাগান করার ইচ্ছা কারইবা না থাকে। এলোমেলোভাবে দুই-তিনটা টবে গাছ লাগানো মানে বাগান নয়, এতে থাকতে
হবে পরিকল্পনা ও শৈল্পিকতা। তা না হলে বারান্দায় বাগান বোঝা যাবে না। ঋতুভিত্তিক গাছ লাগানো যায় বলে বারান্দার বাগানের ক্ষেএে তেমন টেনশন থাকে না। কিন্তু বারান্দায় বাগান করার ক্ষেএে কিছু বিষয় অতি গুরুত্বপূর্ণ যা অবশ্যই একজন সৌখিন ব্যক্তিকে অতি সতর্কতার সহিত খেয়াল রাখতে হবে। টবের গাছ নার্সারি থেকে বাসায় আনার পর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায়, যার প্রধান কারণ সঠিক
পরিবেশ ও যত্ন , ফলে অনেক ক্ষেএে গাছের পাতা হলুদ হয়ে পাতা ঝরে গাছটি মরে যায়। এ জন্য বেস কিছু দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। পাঠকের সুবিধার্থে নিন্মে তা তুলে ধরা হল :
ক) আলো : গাছের মূল জীবনী শক্তি আলো, যার সাহায্যে ক্লোরোফিল ব্যবহার করে গাছ নিজস্ব খাদ্য তৈরি করে বেঁচে থাকে। সেজন্য গাছের চারপাশে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকতে হবে। ফুল ফোটে না এমন গাছে দিনের অর্ধেক সময় এবং ফুল ফোটে এমন গাছে দিনের পুরো সময় সূর্যের আলো পড়লে গাছটি সঠিক ভাবে বেড়ে উঠে। আলোর সময়কালের ভিন্নতার কারণে ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে গাছে ফুল ফোটে , কোনো গাছে বর্ষাকালে বা গ্রীষ্মকালে অথবা শীতকালে ফুল ফোটে ।
খ) তাপমাত্রা : আলো ও তাপের ওপর গাছের জন্ম ও বৃদ্ধি নির্ভর করে । সেজন্য ৭০-৭৫ ডিগ্রি দিনে ও ৬৫-৭০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা রাতে গাছের জন্য উপযুক্ত ।
গ) পানি : সাধারনত নাতিশীতঞ্চ আবহাওয়ার কারণে আমাদের দেশে টবে প্রতিদিনই পানি দিতে হয়। যদি বর্ষাকালে টব বাইরে থাকে, তাহলে পানি দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। যদিও ভেজা মাটি গাছের জন্য উপকারী কিন্তু খেয়াল বাখতে হবে কখনোই টবের মাটি যেন পুরো শুষ্ক না হয় বা টবে পানি জমে না থাকে। উভয় অবস্থা গাছের জন্য ক্ষতিকর।
ঘ) আদ্রতা : নির্দিষ্ট পরিমানের আর্দ্রতা গাছের জন্য সব সময় প্রয়োজন, যার আনুমানিক পরিমান ৩০ শতাংশর বেশি । আর্দ্রতার অভাবে গাছের আগা বাদামি আকার ধারন করে, ফলে কলি গাছ ঝরে পরে।
ঙ) মাটি ও পাত্র/টব: মাটির টব বা পাএই গাছের জন্য সবচেয়ে ভালো। তবে সিরামিক, প্লাস্টিক বা কাঠের টব ব্যবহার করা যায়, আর যার আকার হবে গাছের ধরন বুঝে। গাছের বৃদ্ধি স্বাভাবিক রাখতে মাঝে মধ্যে টব পবির্তন করা ভালো। মাটি বা টবের ব্যাপারে অভিজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
চ) সার: গোবরের পাশাপশি গাছে বিভীন্ন ধরনের সার ব্যবহার করতে হয়। তবে সার ব্যবহারের পূর্বে অভিজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মঞ্জুর আহমেদ শামিম,প্রতিনিধিঃ
লাইফস্টাইল,মঙ্গলবার, ১৭ মে, এইচ বি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।